জ্যোতি আরাধনা
জ্যোতি আরাধনা হল, দীপ হিসেবে আলোকের পুজো করা। এই অনুশীলনটি বৈদিক যুগ থেকে করা হয়ে আসছে ।
ঈশ্বর বা দিব্যসত্তাকে জাগিয়ে তোলার জন্য সাধারণভাবে একটি ছোট দীপ জ্বালিয়ে দিব্য-প্রেরণার উৎসের সঙ্গে নিজেদের সংযুক্ত করা।
অগ্নি-যাকে পাঁচটি উপাদানের মধ্যে সর্বাপেক্ষা পবিত্রতম মান্য করা হয়, সেই অগ্নির মধ্যে গ্রাস করার, রূপান্তরিত করার এবং অর্পণ করার ক্ষমতা থাকে। অর্পণ করার নীতিই, এই অনুশীলনটিতে ব্যবহৃত হয়।
এই অনুশীলনটি আমাদের প্রার্থনার পূর্বে অথবা যেকোনো বিশেষ সময়ে সাধনার জন্য বা স্মরণের জন্য আমরা করতে পারি। সান্ধ্যকালে দীপ প্রজ্জ্বলন বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
পড়তে থাকুন ...দীপ হল একটি পাত্র বা আধার , যার মধ্যে তেল ও একটি সুতির সলতে রাখা যায়। ঐতিহ্যগত ভাবে, বৈদিক যুগ থেকেই মাটি, পিতল অথবা রুপার দীপ, শিখা প্রজ্জ্বলনের জন্য ব্যবহার করা হয়ে আসছে।
সাধনা অথবা প্রার্থনা করার ঘরে অথবা ঘরের ভিতরে নিরালায় কোন এক স্থানে, এই দীপশিখা জ্বালানো যেতে পারে। এই দীপ আধ্যাত্মিক গুরু, ইষ্ট দেবতা অথবা দিব্য-প্রেরণার উৎস, যাঁর সঙ্গে আমরা দিব্য প্রেমের মাধ্যমে নিজেকে সংযুক্ত করতে চাই- তাঁর সামনে জ্বালানো যেতে পারে।
গুরুর অথবা ঈশ্বরের চিত্রের সামনে জ্যোতি প্রজ্জ্বলনের পরে, ধন্যবাদ সূচক একটি প্রার্থনা করা যায় এবং কৃতজ্ঞতাপূর্বক কিছুক্ষণ শান্তভাবে বসা যায়।
শীঘ্রই দেখা যাবে, যে ঘরে এই জ্যোতি জ্বলছে সেই স্থানটি সাধন-স্থল হয়ে উঠবে এবং শান্তি ও সৌন্দর্যের শক্তিতে স্নাত হবে। এই দীপশিখার মাধ্যমে আমরা, ব্যক্তি চেতনার সঙ্গে মহাজাগতিক চেতনার একটি সংযোগ সৃষ্টি এবং অনুভব করতে সমর্থ হব। এভাবেই আমরা ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারি এবং আমাদের জীবনে সেই দিব্যভাব জাগরিত করে তুলতে পারি।
দিব্য সংযুক্তিকে আরো শক্তিশালী করে তোলার জন্য দীপশিখাকে দিবারাত্র সর্ব সময়ই জ্বালিয়ে রাখা যায়। এই অনুশীলনটিকে 'অখন্ড জ্যোতি আরাধনা' নামে অভিহিত করা হয়।
অগ্নি-যাকে পাঁচটি উপাদানের মধ্যে সর্বাপেক্ষা পবিত্রতম মান্য করা হয়, সেই অগ্নির মধ্যে গ্রাস করার, রূপান্তরিত করার এবং অর্পণ করার ক্ষমতা থাকে। অর্পণ করার নীতিই, এই অনুশীলনটিতে ব্যবহৃত হয়। সাকার ও নিরাকারের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করে অগ্নি। অগ্নির মাধ্যমে আমাদের আত্মার সঙ্গে, দিব্য চেতনার অথবা চৈতন্যের সংযোগ ঘটে।
উদ্দেশ্য
উদ্দেশ্য : দিব্য-প্রেরণার উৎসের সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করা এবং আমাদের সাধনার জন্য যথাযথ সাহায্য গ্রহণ করা।
কে
যে কেউ
কোথায়
ঘরের ভিতরে অথবা যে কোন আরাধনা স্থলে।
কখন
এই অনুশীলনটি আমাদের প্রার্থনার পূর্বে অথবা যেকোনো বিশেষ সময়ে সাধনার জন্য বা স্মরণের জন্য আমরা করতে পারি। সান্ধ্যকালে দীপ প্রজ্জ্বলন বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
কতক্ষণ
কমপক্ষে পাঁচ মিনিট।
উপকারিতা
ঈশ্বর অথবা দিব্যসত্তাকে জাগ্রত করতে এবং তাঁর সাথে সংযোগ স্থাপন করতে ।
সাধন স্থলটিকে পরিশুদ্ধ ও পবিত্র করতে, শান্তি ও দিব্য-তরঙ্গে ভরিয়ে তোলার জন্য এই অনুশীলনটি করা হয় ।
পরিবার এবং কার্যস্থলে আধ্যাত্মিক এবং পার্থিব প্রাচুর্য বৃদ্ধি করার জন্য।
যেহেতু অগ্নিকে জ্ঞান হিসেবে দেখা হয়, সেই জন্য ভাগ করে নিলেও অগ্নির উপাদান কখনো কমে যায় না। জ্যোতি আরাধনার দ্বারা আমরা উচ্চতর জ্ঞান লাভ করি, যা আমাদের বৌদ্ধিকসত্তাকে উন্নত করতে আরও সাহায্য করে এবং সঠিক বিচার করার ক্ষমতা দেয়।
জ্যোতি আরাধনা করলে, পুজো/সাধন স্থলের চারপাশে একটি রক্ষা-কবচ (Protective Ring) তৈরি হয়।
আমাদের অনুসরণ করুন
সমস্ত কোটেশন দেখতে ...