ঋষিগণ
সংস্কৃত ভাষায়, ঋষি' শব্দের অর্থ হলো যিনি আলোকজ্যোতি প্রদান করেন (ঋ-জ্যোতি, ষি- প্রদানকারী)। তাঁরা প্রত্যক্ষ সত্য এবং বাস্তবিকই জ্যোতি-সত্তা, যাঁরা সৃষ্টির উচ্চতমস্তরে বসবাস করেন। রক্তমাংসের দেহে আমাদের সামনে উপস্থিত না হলেও, তাঁদের উপস্থিতি এবং তাঁদের তেজঃশক্তি আমরা অনুভব করতে পারি, যখন আমরা আমাদের গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করি।
প্রত্যেক ঋষি তাঁর নিজস্ব প্রজ্ঞা এবং শক্তিতে অনন্য ও বিশিষ্ট। এবং প্রত্যেকের শিক্ষাদানের নিজস্ব কৌশল আছে।
শিল্প, সাহিত্য, চিকিৎসাশাস্ত্র, জ্যোতিষ এবং বিজ্ঞান বিভিন্ন ক্ষেত্রে, ঋষিগণ সর্বদা মানবসভ্যতাকে আশীর্বাদ করেছেন ও যখনই পৃথিবীতে প্রয়োজন অনুভূত হয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভূত জ্ঞানভান্ডার প্রদান করে মহাঋষিগণ মানবতাকে সাহায্য করেছেন। কিন্তু তাঁদের প্রধান দায়িত্ব মানবসভ্যতাকে আধ্যাত্মিকভাবে শিক্ষিত করা এবং আলোকউৎস, যা চিরস্থায়ী আবাস, সেখানে আমাদের ফিরে যেতে পরিচালিত করা।
ঋষিগণ হলেন দেব-সাক্ষাৎকারপ্রাপ্ত (Enlightened) সিদ্ধ মহাত্মা, যাঁরা পার্থিব মায়াজগতের সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বে ও আদর্শ দিব্যসত্তার সূক্ষ্মতম প্রকাশ। মানবতার প্রতি তাঁদের পথনির্দেশনা, ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং সহমর্মিতা অকল্পনীয় ও অপরিমেয়। এই কারণেই সনাতন ধর্মের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যে মহাঋষিগণ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে সর্বদা মহিমান্বিত হয়েছেন।
এই দিব্যাত্মা মহাঋষিগণের নিঃস্বার্থ কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, প্রতি বছর ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চম দিনটি উপবাস এবং প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে, ঋষি-পঞ্চমী তিথি হিসেবে উৎযাপিত হয় । যদিও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানানোর উৎকৃষ্টতম পথ হল, তাঁদের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মনিবেদন করে নিজেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করা।
মহাঋষিগণ সতত আমাদের পরিচালনা করে চলেছেন। যদি আমরা নিয়মিত ধ্যান করি তবে ঋষিরা আমাদের সমস্ত বিষয়ে সহায়তা করেন।
সংস্কৃত ভাষায়, ঋষি' শব্দের অর্থ হলো যিনি আলোকজ্যোতি প্রদান করেন (ঋ-জ্যোতি, ষি- প্রদানকারী)। তাঁরা প্রত্যক্ষ সত্য এবং বাস্তবিকই জ্যোতি-সত্তা, যাঁরা সৃষ্টির উচ্চতমস্তরে বসবাস করেন। রক্তমাংসের দেহে আমাদের সামনে উপস্থিত না হলেও, তাঁদের উপস্থিতি এবং তাঁদের তেজঃশক্তি আমরা অনুভব করতে পারি, যখন আমরা আমাদের গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করি।
সপ্তঋষি
সপ্তঋষিগণ এই ব্রহ্মাণ্ডের পথপ্রদর্শনকারী দিব্যআলোকজ্যোতি। মূলতঃ সত্যলোকে তাঁদের বাস, যে সত্যলোক সত্য, প্রেম, আনন্দ এবং জ্যোতির ক্ষেত্র। যখনই প্রয়োজন পড়ে, তাঁরা এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং জগতসংসারকে পথ দেখান। সপ্তর্ষিগণ, আধ্যাত্মিক-স্তরপরম্পরার (Spiritual Hierarchy) প্রথম স্তরের প্রধান সদস্যবৃন্দ।
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কোটি কোটি ভূ-লোক (Earth) রয়েছে। কেবলমাত্র কয়েক লক্ষ বিশ্ব ভূ-লোকেই প্রাণের অস্তিত্ব বর্তমান। সপ্তঋষিগণ এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি তলের বিভিন্ন ভূ-লোকের নানাবিধ বিষয়ের তত্ত্বাবধান করার জন্য মহাত্মা ঋষিগণকে নিযুক্ত করেন।
মানবজগতকে ঋষিগণের কথা সর্বদা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য আকাশে একটি নক্ষত্রপুঞ্জ রয়েছে, যার নাম "সপ্তঋষি-মন্ডল"।
বর্তমানকালে আমাদের পৃথিবীতে ৯০ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক ঋষি-কর্মকর্তা (Rishi Workers) রয়েছেন; তুলনীয় কয়েক বছর আগেও ঋষি-কর্মকর্তার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৪৪ হাজার। প্রত্যেক ঋষি-কর্মী, অত্রি মহাঋষির কাছে এই পৃথিবীর সমস্ত কর্মকাণ্ডের খবরাখবর পেশ করেন, অত্রি মহাঋষি- যিনি আমাদের এই ভুবনের কর্মঅধিকর্তা (Incharge of our Earth)। অত্রি মহাঋষি এই পৃথিবীতে বহুবার মনুষ্য-জন্ম গ্রহণ করেছেন। বর্তমান মন্বন্তরকালেও (Manvantara) অত্রি মহাঋষি অন্যতম সপ্তঋষি। বর্তমান মন্বন্তরকালের সপ্তঋষিগণ হলেন ভৃগু, অত্রি, অঙ্গিরস, বশিষ্ঠ, পুলস্ত্য, পুলহ এবং ক্রতূ মহাঋষি। সকলেই ব্রহ্মদেবের মন থেকে জাত পুত্রগণ বা মানসপুত্র।
আমাদের অনুসরণ করুন
সমস্ত কোটেশন দেখতে ...