যোগ
◘যোগ' (Yoga) অর্থে সন্মিলন। যোগ হল নিজের সঙ্গে অথবা নিজের আত্মার সঙ্গে ঈশ্বরের সন্মিলন।
◘যোগ হলো মিলনের নিরন্তর প্রয়াস । সচেতন অভিনিবেশ ছাড়া কোন যোগ সম্ভব নয়।
◘বিবিধ শারীরিক বিভঙ্গের মাধ্যমে অথবা শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যখন আমরা যোগাভ্যাস করি, তখন তার ফলশ্রুতিতে হয় হঠযোগ অথবা ক্রিয়াযোগ।
◘যখন আমরা আমাদের মনের সাহায্যে বিভিন্ন মন্ত্রের আবৃত্তি, ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ এবং (অথবা) ধ্যানের মাধ্যমে যোগাভ্যাস করি, তখন তার ফলশ্রুতিতে হয় রাজযোগ।
◘যখন আমরা আমাদের প্রেম, ভক্তি অথবা বিভিন্ন প্রথার দ্বারা আবেগের মাধ্যমে যোগাভ্যাস করি, তখন তার ফলশ্রুতিতে হয় ভক্তিযোগ।
◘যখন আমরা আমাদের নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে এবং ফলের প্রতি নিরাসক্ত হয়ে স্বার্থশূন্য কর্মের দ্বারা যোগাভ্যাস করি, তখন তার ফলশ্রুতি হলো কর্মযোগ।
◘যখন আমাদের মননশীল চিন্তার বিভিন্ন বিচার বিবেচনার দ্বারা আত্ম-অনুসন্ধানের মাধ্যমে যোগাভ্যাস করি, তখন তার ফলশ্রুতিতে হল জ্ঞানযোগ।
◘সব যোগ সম্মিলিতভাবে নিজেকে অথবা 'আত্ম'কে উপলব্ধির মাধ্যমে ঈশ্বর সাক্ষাৎকারের কথা বলে।
◘একজন ব্যক্তি তার স্বতঃপ্রণোদিত চেষ্টার দ্বারা আত্মোপলব্ধির উপরিউক্ত একটি অথবা সবকটির সম্মিলিত যোগের মাধ্যমে ঈশ্বর উপলব্ধি করতে পারেন।
◘যোগের পথে অহং একটি বাধা।
◘একজন যোগী তিনিই, যিনি সদাসর্বদা যোগে প্রতিষ্ঠিত থাকেন।
প্রেম
◘প্রেম আলোক শক্তির এক দৈবিক তরঙ্গ।
◘প্রেমই আমাদের প্রকৃতি।
◘প্রেম সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক আবেগ।
◘প্রত্যেকটি জীবই ভালোবাসা পেতে চায়।
◘প্রেম বিচারহীন হয়।
◘প্রেম মানিয়ে নিতে পারে, প্রেম ক্ষমা করে, প্রেম নিরাময় করে, প্রেম পথপ্রদর্শন করে, প্রেম পরিবর্তন আনে।
◘প্রেমের কোনো সীমা নেই এবং কোনো বাধা নেই।
শান্তি
◘শান্তি হল মনের একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা।
◘শান্তি পরিপূর্ণ সন্তুষ্টির অবস্থা, যখন আর কোনও চাহিদা থাকেনা।
◘শান্তি বেঁচে থাকার ভিত্তি।
◘নীরবতা শান্তি আনয়ন করে।
◘যখনই আমাদের সঙ্গে অন্যদের ও প্রকৃতির একাত্মতা বজায় থাকে, তখনই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।
◘ব্যক্তিগত শান্তি পারিবারিক শান্তির জন্ম দেয়, যা ক্রমশ সাম্প্রদায়িক স্থিতি এবং বিশ্বশান্তিতে পরিণত হয়।
◘শান্তির স্পন্দন পৃথিবীর বুক থেকে যেকোনো হিংসা মুছে দিতে সক্ষম।
সচেতনতা
◘সচেতনতা হলো নিজের অন্তরাত্মা এবং বাহ্যিক পৃথিবী সম্বন্ধে জ্ঞাত হওয়ার , সতর্ক এবং মনোযোগী থাকার সক্ষমতা।
◘সচেতনতা হলো আত্মার সেই দক্ষতা, যার দ্বারা বাস্তবের বিবিধ রূপ সম্বন্ধে জানার এবং বোঝার ক্ষমতা অর্জন করা হয়।
◘দেহ মন এবং আত্মার অংশগ্রহণের মাত্রা অনুযায়ী সচেতনতার যে শ্রেণীকরণ করা হয়, তা হলো জাগ্রত অবস্থা, স্বপ্নাবস্থা, সুষুপ্তি এবং তূরীয় অবস্থা।
◘জাগ্রত বা জাগরণ অবস্থা হলো এমন একটি সচেতন অবস্থা যা জগত সংসারের সঙ্গে প্রতিদিনের আদান প্রদানের মধ্যে দিয়ে ঘটে। এক্ষেত্রে দেহ (ইন্দ্রিয় সমূহ) এবং মন (চিন্তারাশি) সক্রিয় থাকে।
◘স্বপ্ন বা স্বপ্নাবস্থা, সচেতনতার এমন একটি দশা যা ঘুমের মধ্যে ঘটে। এই অবস্থায় দেহ পরোক্ষ অবস্থানে থাকে এবং মননময় কোষ সক্রিয় থাকে।
◘সুষুপ্তি অথবা গভীর নিদ্রা চেতনতার এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি অ-চিন্তন (no-thought) অবস্থাকে প্রত্যক্ষ করে। এখানে দেহ এবং মন উভয়ই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে।
◘তুরীয় বা আত্মচেতনা এমন একটি স্তর যখন আত্মা নিজের সম্পর্কে সজাগ থাকে। এই অবস্থায় দেহ অথবা মনের অংশগ্রহণ ব্যতিরেকেই আত্মা সক্রিয় থাকে।
◘ তূরীয় অবস্থা হল সর্বোত্তম চেতন অবস্থা, যার মধ্যে উপরিউক্ত তিনটি চেতনার অবস্থাই অন্তর্ভুক্ত।
◘চেতনার এই স্তরেই বোধিকল্প শক্তি (intuition) কাজ করতে সক্ষম। তূরীয় অবস্থায় আত্মা স্বয়ং প্রত্যক্ষ করে।
◘একজন আত্মোপলব্ধিকারী ব্যক্তি, চেতনার অন্যান্য তিনটি অবস্থাকে পশ্চাৎপটে ঠেলে সর্বদা তূরীয় অবস্থাতেই একাত্ম থাকে।
◘আমাদের সচেতনার স্তরই হল আমাদের আধ্যাত্মিক অগ্রগতির চাবিকাঠি ও নির্ণায়ক।
আমাদের অনুসরণ করুন
সমস্ত কোটেশন দেখতে ...