বিশ্বামিত্র মহাঋষি
বিশ্বামিত্র মহাঋষি, সকল মহাঋষিগণের মধ্যে সর্বোচ্চ পূজনীয়। তাঁর নামের মতোই তিনি এই বিশ্বের বন্ধু। যদিও তিনি এই মন্বন্তরের সপ্তঋষি নন, তবুও বর্তমান মন্বন্তরের সপ্তর্ষিগণ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করেন । তাঁকে বিশেষভাবে 'ব্রহ্মঋষি' উপাধিতে ভূ্ষিত করা হয়েছে। ব্রহ্মঋষি উপাধি সেই মহর্ষিকেই দেওয়া হয়, যাঁর সর্বোচ্চ দিব্য-প্রজ্ঞা এবং অসীম জ্ঞান রয়েছে, যা 'ব্রহ্মজ্ঞান' নামে পরিচিত।
পুরাণ মতে, বিশ্বামিত্র মহাঋষিই সর্বপ্রথম ঋষি, যিনি ঋকবেদের অতি পূত-পবিত্র 'গায়ত্রী মন্ত্র'-এর সৃষ্টি করেছিলেন ও এই মন্ত্রের সম্পূর্ণ অর্থ বুঝতে পেরেছিলেন। বিশ্বামিত্র মহাঋষি একমাত্র ব্রহ্মঋষি যিনি কঠোর তপস্যা বলে এই উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন।
অতীত জীবনে বিশ্বামিত্র মহাঋষি দিব্য মাতৃকার উপরে দীর্ঘ তপস্যার পর এক রাজকীয় জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করতে চেয়েছিলেন। তাঁর সেই ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছিল এবং রাজা গধির(King Gadhi) ঘরে রাজকুমার কৌশিক রূপে জন্ম নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে দেবী এই আশীর্বাদও দিয়েছিলেন যে, ওই একই জীবনে তিনি একজন মহর্ষি হয়ে উঠবেন। রাজকুমার কৌশিক রূপে বিশ্বামিত্র মহাঋষিকে ক্ষত্রিয় পরম্পরা অনুযায়ী যুদ্ধ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর জীবনের দ্বিতীয় ভাগ যখন সক্রিয় হয়, বশিষ্ঠ মহাঋষির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকার ঘটে।
বশিষ্ঠ মহাঋষির সঙ্গে সাক্ষাৎকার তাঁর মধ্যে এক অগ্নি স্ফুলিঙ্গ তৈরি করেছিল যাতে তাঁর দেহ, মন ও আত্মা থেকে যাবতীয় প্রভাবশালী ক্ষত্রিয় কর্মচিহ্ন দহন করার মাধ্যমে একজন ব্রহ্মঋষিতে রূপান্তরিত হওয়া যায়। বিশ্বামিত্র মহাঋষি, ব্রহ্মদেবের উপর কঠিন তপস্যা করেন কিন্তু তিনি যেহেতু ব্রহ্মদেবের মানসপুত্র ছিলেন না এবং মানব গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছিলেন বলে, ব্রহ্মদেব তাঁকে ব্রহ্মঋষি হিসেবে স্বীকৃতি দেননি । অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও দৃঢ় সংকল্পের অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করে, তিনি তাঁর সাধনা আরো তীব্র করেছিলেন এবং সহজে হার স্বীকার করেননি। স্বয়ং বশিষ্ঠ মহর্ষির দ্বারা পরিচালিত হয়ে, বিশ্বামিত্র মহর্ষি তাঁর সকল নেতিবাচক কর্মফলের দহন করে, সাধনাতে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন এবং এরপর বশিষ্ঠ মহাঋষি স্বয়ং তাঁকে 'ব্রহ্মঋষি' উপাধিতে ভূষিত করেন।
ব্রহ্মঋষি হয়ে ওঠার পর বিশ্বামিত্র মহাঋষি এমন একটি উচ্চতায় উত্থিত হয়ে ওঠেন, যে শক্তি ও ক্ষমতায় তিনি অতুলনীয় হয়ে উঠেছিলেন। সৃষ্টির যেকোন অংশেই তিনি বিনা বাধায় অভিগমন করতে পারতেন । মনুষ্য জাতির উন্নতির জন্য তিনি গায়ত্রী দেবীর শক্তিকে আমাদের কাছে উপলব্ধি করিয়েছিলেন এবং তা ছিল সৃষ্টির প্রথম অভিব্যক্ত(manifested) শক্তি। পঞ্চম এবং ষষ্ঠ মন্বন্তরে বিশ্বামিত্র মহাঋষি ছিলেন সপ্তঋষিগণের মধ্যে অন্যতম । ত্রেতা যুগে শ্রীবিষ্ণুর অবতার রূপে প্রভু শ্রীরামের অবতীর্ণ হওয়ার প্রধান সঞ্চালক ছিলেন স্বয়ং বিশ্বামিত্র মহাঋষি। বিশ্বামিত্র মহর্ষি অমর এবং স্বয়ং মহাদেব তাঁকে আশীর্বাদ স্বরূপ একটি বিশেষ তারায় স্বতন্ত্র স্থান প্রদান করেছিলেন, সেই তারাটিই ধ্রুবতারা ।
ব্রহ্মঋষি হয়ে ওঠার পর বিশ্বামিত্র মহাঋষি এমন একটি উচ্চতায় উত্থিত হয়ে ওঠেন, যে শক্তি ও ক্ষমতায় তিনি অতুলনীয় হয়ে উঠেছিলেন। সৃষ্টির যেকোন অংশেই তিনি বিনা বাধায় অভিগমন করতে পারতেন । মনুষ্য জাতির উন্নতির জন্য তিনি গায়ত্রী দেবীর শক্তিকে আমাদের কাছে উপলব্ধি করিয়েছিলেন এবং তা ছিল সৃষ্টির প্রথম অভিব্যক্ত(manifested) শক্তি।
পঞ্চম এবং ষষ্ঠ মন্বন্তরে বিশ্বামিত্র মহাঋষি ছিলেন সপ্তঋষিগণের মধ্যে অন্যতম । ত্রেতা যুগে শ্রীবিষ্ণুর অবতার রূপে প্রভু শ্রীরামের অবতীর্ণ হওয়ার প্রধান সঞ্চালক ছিলেন স্বয়ং বিশ্বামিত্র মহাঋষি। বিশ্বামিত্র মহর্ষি অমর এবং স্বয়ং মহাদেব তাঁকে আশীর্বাদ স্বরূপ একটি বিশেষ তারায় স্বতন্ত্র স্থান প্রদান করেছিলেন, সেই তারাটিই ধ্রুবতারা ।
অমিত শক্তিধর হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বামিত্র মহাঋষি বিনয়, দয়া এবং বদান্যতার প্রতিমূর্তি।
আমাদের অনুসরণ করুন
সমস্ত কোটেশন দেখতে ...